সুখ মানে কী
যে কাজ করে মানুষ মনে সুখ অনুভব করে, তাই তার কাছে সুখের সংজ্ঞা। কাছের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করা, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া ইত্যাদির মাঝে সুখ লুকিয়ে রয়েছে। এর মাধ্যমে সুখের রহস্য বোঝার চেষ্টা করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৮০ সালে গবেষণাকৃত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে নানা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। মানুষের জীবনের নানা সময়ের সুখানুভূতির সন্ধান করা হয় ওই গবেষণায়। এর সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ‘দ্যা গ্রান্ট স্টাডি’ এবং হার্ভার্ডের একই ক্লাসের ২০১০ সালের জরিপ।
গ্রান্ট স্টাডি : ৭৫ বছর ধরে এই গবেষণা পরিচালনা করেন জর্জ ভাইল্যান্ট। সুখের মাত্র দুটো রহস্য বেরিয়ে এসেছে এখান থেকে।
১. সুখ হলো ভালোবাসা।
২. সকল দুষ্ট কাজের পেছনের মূল অ্যালকোহল না হলে, এটা দুষ্ট কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
২০১০ এর জরিপ : এতে বলা হয়, সুখ আসলে ভালো কিছু। সুখ মূলত তিনটি ভালো বিষয় থেকে আসে। এগুলো হলো-
১. অন্যের জন্যে ভালো কিছু করা। যেমন- গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করা। আবার এ ধরনের কাজে ভূমিকা রাখাও হতে পারে।
২. পছন্দের কাজ করা। যে কাজে আপনি ভালো, তা বেশি বেশি করাতে সুখ মেলে।
৩. নিজের জন্যে ভালো কিছু করা। নিজের দেখভাল করার মাধ্যমে আত্মতৃপ্তি মেলে।
এ বছরেও একটি জরিপ চালনা করা হয়। সুখকর অনুভূতি পেতে যেকোনো কাজ করাটাই সুখ। পেশা বা উপার্জন বা সম্পদ এবং সুখের সম্পর্ক রয়েছে। তবে সুখ এবং পেশা নিয়ে মানুষ কি ভাবছে, এর মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি ভিন্ন। চরম সুখী মানুষ এবং অন্য দলের মানুষের মধ্যে সুখের বিষয়টি আলাদা। যেমন-
১. খুব সুখীদের ৬৭ শতাংশ বলেন জীবনের বর্তমান সময়টিকে সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত বলে মনে করেন। অন্যদলের ২০ শতাংশের এমনটা মনে হয়।
২. চরম সুখীদের ৪৭ শতাংশ বর্তমান পেশা নিয়ে বেজায় সন্তুষ্ট। অন্য দলের মাত্র ১৪ শতাংশ খুশি।
৩. চরম সুখীদের মাঝে পেশা ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তৃপ্তি কাজ করে। অন্যদের ১৪ শতাংশ এ ক্ষেত্রে তুষ্ট।
৪. এদের ৪৯ শতাংশ নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করে চলেছেন বলে মনে করেন। অন্যদের ১৮ শতাংশ তা অনুভব করেন।
আবার সম্পর্ককে দৃঢ় করাটাকে সুখের সবচেয়ে ভালো উৎস বলে মনে করা হয়। চরম সুখীদের ৭৫ শতাংশ এ বিষয়ে একমত। আর অন্য দলের ৪৯ শতাংশ এতে মত দিয়েছেন।
ব্যায়াম ও নিজের যত্নের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্যের অধিকারীরা নিজেদের সুখী বলে মনে করেন। চরম সুখীদের ৭৭ শতাংশ সপ্তাহে তিন-চারবার ব্যায়াম করেন। অন্য দলের মানুষদের ৪৮ শতাংশ এ কাজ করেন। তবে এদের অনেকে মিথ্যাও বলেছেন। অধিক সুখীরা নিজেদের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বলে মনে করেন, অন্যদের ৪৮ শতাংশ।
তাই ব্যক্তিগত জীবনে সুখী হতে হলে সুখানুভূতি দেয় এমন কাজ করতে হবে। সম্পর্কের বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে।
আর নেতা হিসাবে সুখী হতে হলে এমন পরিস্থিতি গড়ে তুলুন যেন দলের সদস্যরা যা করছেন তার চেয়েও বেশি কিছু করছেন বলে অনুভব করেন।