রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার | Rupchocha Cha er Bebohar

রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার |Rupchocha Cha er Bebohar

বিশেষ দিনগুলোতে সবাই চায় নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে। আর তাই পোশাক, গয়না আর মেকআপ ই যথেষ্ট নয়।এর সাথে প্রয়োজন নিজের যথাযথ পরিচর্যা। আর তাই দিনে সানস্ক্রিন, রাতে নাইট ক্রিম তো আছেই তাছারা ও আপনার রান্নাঘরেই এমন জিনিস থাকে, যা যেকোনো ব্র্যান্ডের জিনিসকে হার মানাতে পারে। আর  এটা হলো আপনার প্রিয় চা। চায়ে এমন অনেক উপাদান থাকে যা  আপনার সৌন্দর্যের  শুধু জৌলুসই বাড়াবে না, নানা রকম সমস্যায় ও দূর করবে। ক্লেনজার থেকে টোনার, স্ক্রাবার থেকে ফেসপ্যাক যেকোনো কিছুর মধ্যে চায়ের বিকল্প খুঁজে পাওয়া মুশকিল।আর তাই কম সময় ব্যয় করে জেনে নিন প্রাকৃতিক রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার।

 

রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার
রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার

রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার

রূপচর্চায় চায়ের ব্যবহার-

১) ক্লেনজার
গ্রিন টি ক্লেনজার হিসেবে খুবই চমত্‍কার। এক টেবিল চামচ সাধারণ ক্লেনজারের সাথে এক টেবিল চামচ চা পাতা (গ্রিন টি) মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হাত ভিজিয়ে ঘষে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকে জমে থাকা ধুলোময়লা, ঘাম, তেল পরিষ্কার হয়ে যাবে। ত্বকে আর্দ্রতার ভারসাম্য বজায় থাকবে।

২) টোনার
গ্রিন টি খুবই ভালো প্রাকৃতিক স্কিন টোনার। গরম পানিতে গ্রিন টি আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে একটি কাচের পাত্রে রাখুন। এর সাথে গোলাপজল, গ্লিসারিন, অ্যালোভেরার রস ভালো করে মেশান। এরপর মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। মুখ ধোয়ার পর তুলায় এই টোনার নিয়ে মুখ ও গলা মুছে নিন। নিয়মিত লাগালে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, ত্বক টানটান হবে। ত্বক হবে উজ্জ্বল।

৩) স্ক্রাবার
এক টেবিল চামচ মিহিদানার চিনি, এক টেবিল চামচ চালের গুঁড়া, এক চা চামচ কাঠবাদামের গুঁড়া, পরিমাণমতো গ্রিন টি ও গোলাপজল একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। গ্রিন টি না থাকলে ব্ল্যাক টিও ব্যবহার করতে পারেন। এবার মিশ্রণটি মুখে ও গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে কিছুক্ষণ ঘষে ধুয়ে ফেলুন। মরা কোষ সহজে দূর হয়ে যাবে। ত্বকের কালো ছোপছোপ দাগ অনেক হালকা হয়ে যাবে। ত্বক হয়ে উঠবে কোমল, মসৃণ ও উজ্জ্বল। এই স্ক্রাবার সপ্তাহে তিন ব্যবহার করলে বলিরেখার সমস্যা কমে যাবে।

৪) ফেসপ্যাক
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চায়ের বিকল্প নেই। এক টেবিল চামচ বেসন, একটা ডিমের সাদা অংশ, এক চা চামচ মধু, এক চা চামচ কাঠবাদামের গুঁড়ার সাথে পরিমাণমতো চায়ের লিকার মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট মুখে, গলায়, ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে আলতো মাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের জৌলুস বেড়ে গেছে বহু গুণ।

৫) ফেলনা টী ব্যাগ দিয়ে ফেসিয়াল স্ক্রাব

আমাদের ত্বকের যত্নে স্ক্রাব অন্যতম। দাগহীন ঝলমলে সুন্দর ত্বকের জন্য স্ক্রাবের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। স্ক্রাব ত্বকের উপরের মরা চামড়া তুলে ফেলতে সাহায্য করে থাকে।আর এতে করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষভাবে গ্রিন টীর ফেসিয়াল স্ক্রাবের মাধ্যমে উজ্জ্বল ত্বকের পাশাপাশি পেতে পারেন দাগহীন কোমল উজ্জল  ত্বক। মাত্র ৫ মিনিটে ঘরে বসেই তৈরি করে ফেলতে পারেন এই ফেসিয়াল স্ক্রাব ফেলনা টী ব্যাগ দিয়েই। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক।

টী ব্যাগ দিয়ে ফেসিয়াল স্ক্রাব-
যা যা লাগবেঃ
– ব্যবহৃত গ্রিন টী ব্যাগ
– ১ চা চামচ মধু
– সামান্য চালের গুঁড়ো

পদ্ধতি ও ব্যবহারঃ
– টী ব্যাগ দিয়ে গ্রিন টী বানিয়ে নিন। গ্রিন টী পানের পাশাপাশি এই ফেলনা টী ব্যাগ রেখে দিন। এই টী ব্যাগ থেকে বের করে নিন ব্যবহৃত চা পাতা।
– এরপর এই পাতায় মেশান মধু ও চালের গুঁড়ো। ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে নিন।
– এবার এই মিশ্রন সাধারণ স্ক্রাবের মতো ব্যবহার করে নিন।

এই ফেলনা টী ব্যাগ স্ক্রাবের উপকারিতাঃ
– ত্বক করে দাগহীন
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
-ব্রণের সমস্যা দূর করে।

তাছাড়া ও , চায়ের মধ্যে উপকারী উপাদানের অভাব নেই। যেমন ব্ল্যাক টিতে থাকে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, ট্যানিন ও পলিফেনল। আবার গ্রিন টিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনল, ট্যানিন ও ফ্লোরাইড। এইসব উপদানগুলো ত্বকের পুনর্গঠনে চমত্‍কার কাজ করে থাকে।এর ফলে বলিরেখা, বয়সের ছাপ ইত্যাদি নানা সমস্যা দূর হয়ে থাকে। পাশাপাশি সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির হাত থেকে ত্বককে রক্ষা করে থাক।