বৈশাখী সাজসজ্জা

বৈশাখী সাজসজ্জা

বৈশাখী সাজসজ্জা

পহেলা বৈশাখ বাঙালির অত্যন্ত আনন্দের উৎসব। নতুন বছরকে বরণ করার উত্সব এইদিন। পহেলা বৈশাখের যে আড়ম্বর তার বড় অনুষঙ্গ হচ্ছে—সাজসজ্জা। আর বৈশাখী সাজসজ্জা মানেই বাঙালি নারীর উত্সব উদযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর বাঙালি নারী তো শাড়িতেই অতুলনীয়।

বৈশাখী সাজসজ্জায় সাধারণত লাল-সাদার আধিক্য দেখতে পাওয়া যায়। কেননা বৈশাখের রং মূলত লাল-সাদা। তবে বর্তমানে কেবলমাত্র এ দুটি রঙে সীমাবদ্ধ নেই বৈশাখ। যুক্ত হয়েছে আরও মানানসই উজ্জ্বল রং। কেউ হয়তো ভিন্ন রঙের পোশাকের সঙ্গে কপালের লালটিপ, লাল-সাদা রেশমি চুড়ি বা খোঁপার লাল-সাদা ফুল পরেই বৈশাখী সাজটাকে ফুটিয়ে তুলবেন। তবে পোশাকের ক্ষেত্রে অবশ্যই হওয়া চাই সুতি কাপড়ের পোশাক।

মেকআপ

বৈশাখী সাজে মেকআপের বেজ অবশ্যই হতে হবে হালকা ও স্বাভাবিক। প্রচণ্ড গরমে ও রোদের তাপে যেন মেকআপ নষ্ট না হয় তাই অয়েল ফ্রি এবং ওয়াটারপ্রুফ মেকআপ নিন। ভারী বা অতিরঞ্জিত মেকআপ দৃষ্টিকটু লাগবে এবং ঘামে নষ্ট হতে পারে। চোখের সাজের ক্ষেত্রে হালকা আইশ্যাডো এবং মানানসই মাশকারার ব্যবহার। আইনলাইনার এবং মাশকারা অবশ্যই ওয়াটারপ্রুফ হওয়া উচিত। চোখের পাতায় বা আপার ল্যাশলিডে যদি মোটা করে লাইনার টানেন, তাহলে লোয়ার ল্যাশটিয়ে কাজলের ব্যবহার না করে ঘন করে মাশকারা দিন লেয়ার আই ল্যাশে। এবং মাশকারা অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ হওয়া উচিত। ঠোঁটে দিতে পারেন লাল কিংবা অন্য হালকা রঙের লিপস্টিক। কপালে লাল টিপ বা বৈশাখী সাজকে ফুটিয়ে তুলতে কপালে এঁকে দিন লোকজ নকশা যদি ব্লাশার ব্যবহার করতে চান তাহলে করুন খুব হালকাভাবে শুধুমাত্র একটু আভার মতো।

চুলের সাজ

বাঙালির চুলের সাজে খোঁপা বা বেণীই মানানসই। শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া সবকিছুর সঙ্গেই খে৭াপা বা বেণী মানাতে পারে তবে আপনাকে বুঝতে হবে কিভাবে করলে আপনার ওভারঅন গেটাপের সাথে আপনার চুলের সাঁজটি মাসানসই হবে। এবং আপনি স্বাচ্ছন্দে তা ক্যারি করতে পারবেন এবং অন্যের কাছেও তা গ্রহণযোগ্য হবে। মনে রাখবেন চুল আপনার সাঁজের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। চুলের সাঁজই আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বৈশাখে যেহেতু প্রচণ্ড গরম থাকে তাই চুলের সাজের ক্ষেত্রে এমন কিছু করুণ যা আপনার সারাদিনির বৈশাখি সাজে বিরক্তির কারণ না হয়। এবং স্কাল্পে বাতাস চলাচল করতে পারে। ছোট বা মাঝারি চুল হলে আপনার সুন্দর হেয়ারকাটটি বা আয়রণ করে একপাশে ফুল পরুন তবে ব্যাগে নিয়ে নিবেন না ক্লিপ বা রাবার ব্যান্টি যেন প্রয়োজনে ছাড়াচুলটি বেঁধেও নিতে পারেন।

অনুষঙ্গ

বাঙালির প্রাণের উত্সবে চুড়ির মতো নিখাদ বাঙালি ফ্যাশন অনুষঙ্গ বৈশাখের সাঁজকে সত্যিই দেয় পূর্ণতা। তাই আপনার দুই হাতে পরে নিন লাল-সাদা রেশমি চুরি। সারাদিনের সাজে খোঁপা বা বেনীতে পরা কাঁচাফুল নষ্ট হয়ে যায় তাই পড়তে পারেন খোপার কাটা। কপালে মানানসই টিপ বা লোকজ নকশা করা টিপ এঁকে নিতে পারেন।

সর্তকতা

এ সময় প্রখর রোদের তাপ থাকে। সূর্যের রশ্মির অতি বেগুনি রশ্মি এবং ফ্রি র্যাডিক্যাল আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে। যেমন বলিরেখা, পিগমেন্টেশন, স্যানট্যান ইত্যাদি। প্রখর সূর্যতাপ ত্বকের কোমলতা অনেকটাই কমিয়ে দেয়। পহেলা বৈশাখে যারা বাইরে থাকবেন তাদের কিছুটা হলেও সানবার্ন হয়েই যায়। সমভ্ব হলে সানগ্লাস ও ছাতা ব্যবহার করুন। ঘাম হওয়ার কারণে গরমে যে ক্লান্তি হয় তার থেকে মুক্তির স্বাভাবিক উপায় মৌসুমি ফল ও ফলের জুস খাওয়া। এতে থাকা গ্লুকোজ ও ফুট্রোজ শরীর সতেজ তো করবেই। ফলে থাকা মিনারেল পুষ্টি ও ডাবের পানি পান করুন।

টিন-এ জাররা মেকাপ না করলেই ভালো। সানব্লক ব্যবহার করুন। সাঁজের ফোনে যতটা সম্ভব সাধারণ থাকা যায় ততই ভোলো। প্রথমত খেয়াল রাখুন নিজের আরামের বিষয়টি।