শিশুর জন্মের পর চুলপড়া প্রতিরোধে করণীয় | Shisur Jonmer Por Chul pora Protirodhe koroniyo

শিশুর জন্মের পর চুলপড়া প্রতিরোধে করণীয়

 Shisur Jonmer Por Chul pora Protirodhe koroniyo

নরমাল ডেলিভারি ও সিজারিয়ান কোনটিতে বেশি চুল পড়ে

নরমাল ডেলিভারি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তাই হরমোনের মাত্রা কমে স্বাভাবিকভাবে আর সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের পর হরমোনের মাত্রা হঠাৎ করে কমে যায়। তাই সিজারের পর চুল পড়ার আশঙ্কা বেশি।
মায়ের ঘুম না হলেও চুল পড়ে। শিশুকে খাওয়ানোর জন্য রাতে বার বার মাকে উঠতে হয়, সারা দিন মাকে হিমশিম খেতে হয় শিশু সামলাতে, নিজের দিকে খেয়ালই রাখা যায় না। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পরিবারেরই সদ্যপ্রসব করা নারীর তেমন খাওয়া-দাওয়াও হয় না। ফলে ঘুম হয় না। তখন চুল পড়ে।
এ চুল গজানোর জন্য ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসক মাথায় স্টেরয়েড ড্রপ ম্যাসাজ করতে বলেন। তাতে খানিকটা কাজ হয়। তা ছাড়া মাথায় ভালোভাবে ম্যাসাজের জন্য রক্তসঞ্চালন বাড়ে, তাতে চুল গজায়।
সন্তান হওয়ার সাধারণত দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত চুল পড়ে। তবে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া ও যত্ন পেলে এই চুল আবার স্বাভাবিকভাবে গজিয়ে যায়।

যত্নআত্তি

সন্তান গর্ভে থাকাকালীন এই যত্ন শুরু হওয়া দরকার। গর্ভাবস্থা ও বুকের দুধ খাওয়ানো—এই দুই অবস্থাতেই মেয়েদের স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় ক্যালরির ওপরে আরো ৩০০ থেকে ৫০০ ক্যালোরি অতিরিক্ত প্রয়োজন হয়। তাই প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট—সবই ঠিকমতো খেতে হবে। একবারে না পারলে বার বার অল্প অল্প করে খাওয়া দরকার। ফল ও দুধ খেতে হবে পর্যাপ্ত। আমাদের দেশে সন্তান হওয়ার পর দুধ, সাগু খাওয়ার যে প্রথা প্রচলিত আছে তা ক্যালোরির জোগান দেয়।

খুব বেশি তেল-মশলা দেওয়া খাবার এবং অতিরিক্ত ভাজাপোড়া না খাওয়াই ভালো।

রক্তস্বল্পতা একটি বড় সমস্যা। আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ মায়ের হিমোগ্লোবিন ১০ গ্রাম শতাংশের নিচে। এর চিকিৎসা অবশ্যই ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী করতে হবে। চিকিৎসা মানে ইচ্ছেমতো আয়রন বড়ি বা ক্যাপসুল খাওয়া নয়। কোন ওষুধ কার ক্ষেত্রে কার্যকর তা একমাত্র চিকিৎসকই বলতে পারবেন। এ ছাড়া দেওয়া হয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
দুপুরের দিকে শিশুকে দুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে যদি বাড়ির অন্য কোনো আত্মীয় বা পরিচারিকার কাছে রেখে মা নিজে অন্তত দু-তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে নিতে পারেন, তাহলে খুব ভালো হয়। দরকার হলে এ সময় শিশুকে খাওয়ানোর জন্য বুকের দুধ বের করে সঞ্চয় করে রেখে দেওয়া যেতে পারে।
সপ্তাহে দুদিন নন-মেডিকেটেড শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ঘষে ফেলুন। রাতে শোয়ার আগে মাথায় লাইট হেয়ার অয়েল তুলোয় ভিজিয়ে নিয়ে ম্যাসাজ করুন অন্তত পাঁচ মিনিট।
সন্তান জন্মদানের পর মায়ের শরীর-স্বাস্থ্যের সঙ্গে চুল ও ত্বকের পূর্ণাঙ্গ পরিচর্যা খুবই দরকার। অনেক সময় সন্তান জন্মদানের পর মা তার স্বাভাবিক জৌলুস হারিয়ে ফেলেন। চুলের প্রকৃত যত্ন না নেওয়ার ফলে মায়ের মাথায় টাক পর্যন্ত দেখা যেতে পারে। তাই চুল পড়াকে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন ও চিকিৎসা নিন।