Purusher Protidiner Rupchorcha Tips | পুরুষের প্রতিদিনের রূপচর্চা টিপস Leave a comment

নিজেকে আকর্ষণীয় ও সুন্দর পরিচ্ছন্ন দেখাতে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরও উচিত ত্বকের যত্ন নেওয়ার।

রূপচর্চাবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে কানাডিয়ান ডার্মটলজি অ্যাসোসিয়েশনের ডা. ল্যান ল্যানডেল্স ছেলেদের ত্বকের যত্নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ দেন। আসুন জেনে নেই সেই উপায়গুলো কি কি ।

নিজের সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি

অন্য়দের কাছ থেকে  নিজের সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি করতে চাইলে, প্রথমেই ত্বকের প্রতি মনোযোগ দিন। যারা কম দামী লেজার বা ক্ষুর, সাবান ও পুরাতন সুগন্ধি ব্যবহার করেন তাদের ত্বকের জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন।

এছাড়া রোদে ঘুরাঘুরির কারণে ত্বক রুক্ষ হওয়াসহ ব্রণের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই যত্নশকারে শেইভ করা, ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখাসহ ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ত্বকের যত্ন নিন।

সঠিকভাবে শেইভ না করা

অনেক সময় ছেলেরা নিখুঁতভাবে শেইভ করার জন্য দাড়ি যে পাশে উঠে তার বিপরীত পাশ থেকে শেইভ করেন। যা করা একদমই ঠিক না। কারণ এতে ব্লেডের আঘাতে চামড়া কেটে যেয়ে লোমকূপ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এবং কেটে যাওয়া স্থানে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে।

তাই সঠিক উপায়ে দাড়ি কামাতে হবে, এতে ত্বক মসৃণ থাকবে।তাছাড়া বারবার একই জায়গায় শেইভ না করে মুখের প্রতিটি অংশে একবার করে শেইভ করা ভালো।

আদ্র বা ভেজা ত্বকে শেইভ করা

শুষ্ক ত্বকে শেইভ করার সময় ব্লেডের সঙ্গে ত্বকে ঘর্ষণের ফলে চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। একই জায়গায় একাধিকবার রেজারের ঘর্ষণে ত্বকের চামড়া, ব্রণ ও ‘ইনগ্রৌন হেয়ার’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ত্বকে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

চামড়ার উপরিভাগের নিচের স্তরে দাড়ি গজায় কিন্তু চামড়ার বাহিরে বের হয় না, এরকম পরিস্থিতিকে ‘ইনগ্রৌন হেয়ার’ বলে।

তাছাড়া শুষ্ক ত্বকে শেইভিং ক্রিম লাগানোর আগে ত্বক পানি দিয়ে ভিজিয়ে নেওয়া ভালো। স্পর্শকাতর এবং শেইভ করতে সমস্যা হয় এমন ত্বকের ক্ষেত্রে গোসলের সময় বা গোসলের পরপরই শেইভ করা উচিত। কারণ ওই সময় ত্বক ও দাড়ি নরম থাকে। ফলে শেইভ করা সহজ হয়। ভেজা ও উষ্ণ ত্বকে হালকা শেইভিং জেল বা ত্বক মসৃণ রাখে এমন জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে চুল বা দাড়ি নরম থাকবে। শেইভ করার এক মিনিট আগে ত্বকে শেইভ জেল লাগাতে হবে।

সঠিক রেইজর নির্বাচন

বাজারে চার ব্লেড, পাঁচ ব্লেড ও ব্যাটারি চালিত মাল্টি-ব্লেডের রেইজর পাওয়া যায়। তবে স্পর্শকাতর ও ব্রণপ্রবণ ত্বকের জন্য বেশি ব্লেডের রেইজর ব্যবহার করা উচিত নয়। সাধারণত যাদের চুল কোঁকড়া, মোটা বা এলোমেলোভাবে জন্মায় তাদের ‘ইনগ্রৌন হেয়ার’ বেশি হয়। ‘ইনগ্রোন হেয়ার’ ছোট করে কাটার পর যখন বড় হতে থাকে তখন চামড়ার সঙ্গে সুক্ষ্মভাবে জড়িয়ে থাকার প্রবণতা থাকে এবং ‘রেড বাম্প’ বা লালচে ফুসুকড়ি তৈরি করে। মাল্টি-ব্লেডের রেইজর দিয়ে একবারেই চমৎকারভাবে শেইভ করা যায়। যারা একই জায়গায় একাধিকবার শেইভ করতে বিরক্ত বোধ করেন তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকারী। তবে যাদের ‘ইনগ্রোন হেয়ার’ আছে তাদের দুই ব্লেডের রেইজর ব্যবহার করা উচিত।

এছাড়া যাদের এলার্জি সমস্যা আছে তাদের উচিত ‘টাইটেনিয়াম ব্লেডের রেইজর’ ব্যবহার করা।

আফটার শেইভ ও সুগন্ধি পণ্য এড়িয়ে যাওয়া

প্রসাধনীতে থাকা রং এবং সুগন্ধি ছেলেদের ত্বকের জন্য ভালো নয়। সুগন্ধিযুক্ত পণ্য ত্বকের ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখে। বাজারে যেসব পণ্যে সুগন্ধি নেই বলে বিক্রি করা হয়, মূলত সেসব পণ্য সুগন্ধি মুক্ত না। এসব পণ্যে মাস্কিং সুগন্ধি থাকে।

স্পর্শকাতর ত্বকে আফাটার শেইভ ব্যবহার করা উচিত না। কারণ আফটার শেইভয়ে সুগন্ধির পরিমাণ বেশি থাকে যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। সেক্ষেত্রে স্পর্শকাতর ত্বকে হালকা, অয়েল-ফ্রি মোয়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।

ব্রণ কমাবে এমন পণ্য ব্যবহার

অনেকে ছেলের ধারণা বয়সের কারণে ব্রণ হয়। তবে ব্রণ শুধু কিশোর বয়সের সমস্যা নয়, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের ব্রণ হতে পারে।

সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ত্বক বেশি তৈলাক্ত হয়ে থাকে। আর তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি। এ পরিস্থিতি এড়াতে অয়েল-ফ্রি বা নন-কমিডোজেনিক বা যেসব পণ্য লোমকূপ বন্ধ করবে না এরকম প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারে।

নন-কমিডোজেনিক পণ্য ব্যবহার করলে ত্বকে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস সমস্যা থাকবে না। এছাড়া ব্রণ দূর করতে ‘নন-কমেডোজেনিক ক্লেনজার’ বেশ কার্যকর।

অধিক মোয়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা

ত্বক ভালো রাখতে কীভাবে এবং কী ধরনেরর মোয়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। সেক্ষেত্রে ত্বক ভেজা থাকা অবস্থায় মোয়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সাধারণত মুখ ধোয়ার পর বা গোসলের পর দিনে কয়েকবার মোয়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যায়। এছাড়া ত্বকে অয়েল ফ্রি এবং নন-কমিডোজেনিক মোয়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করা উচিত। কারণ ক্রিম ব্যবহারে ত্বকের লোমকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

সানস্ক্রিন ব্যবহার

ছেলেরা সাধারণত সানস্ক্রিনে ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করেন না। তবে শীত বা গ্রীষ্ম যে কোন সময়ই বাইরে বেশিক্ষণ থাকলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকে উপর ক্ষতিকর প্রভাব রাখতে পারে।

শুষ্ক বা শীতের মৌসুমে ছেলেদের উচিত মোয়েশ্চারাইজ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। বাজারে ভালো মানের নন-কমিডোজেনিক সানস্ক্রিন লোশন পাওয়া যায় এবং সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর বা এসপিএফ ৩০’র কম নন-কমিডোজেনিক সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার না করাই ভালো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *